মোশারফ হোসেন স্বাধীনের লেখা-

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আমরাও আমাদের চিন্তাধারা……..

পার্ট-১

🖋️মোশারফ হোসেন স্বাধীন 

🎲মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।”সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।” এই কথাটি আজ থেকে বহু শতাব্দী আগে চণ্ডীদাস বলে গিয়েছেন যা বর্তমানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মূলমন্ত্র।প্রকৃতির সেরা জীব মানুষ।মানুষের মধ্যে রয়েছে বুদ্ধি,বিবেক,মানবিকতা, আবেগ আবার সেই আবেগ নিয়ন্ত্রণে সুনিয়ন্ত্রিত সুক্ষ্ম বিচারবোধ। তার পরেও সময়ের ব্যবধানে  মানুষ তার মনুষ্যত্ববোধ একবারেই ভুলে যায়। ভুলে যায় তার আপন বিবেকবোধ। প্রকৃতির সৃষ্টি তত্ত্বে মানুষ মানুষে কোনো পার্থক্য বা ভেদাভেদ নেই তেমনি নেই কোন আলাদা নাম  কিন্তু মানুষ নিজেই তার জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভেদ সৃষ্টি করছে..।আজ শ্রেষ্ঠ বিচারবোধ সম্পন্ন  মানুষ ঐক্যের আদর্শ ভুলে লোভ,হিংসা,পরমত অসহিষ্ণুতা,মৌলবাদী সংকীর্ণ স্বার্থ চিন্তার কারণে সংঘর্ষ আর রক্তক্ষয়ী হানাহানিতে মেতে উঠেছে। ফলাফল খুবই বেদনাদায়ক!  অকালে ঝরে পড়ছে কতো তাজা প্রাণ! ঐক্য ও সংহতির উপর পড়ছে চরম আঘাত।ধর্ম,বর্ণ ,সম্প্রদায় ভিত্তিক ভেদাভেদ ও সংঘাত এর শেষ কোথায়? কেন  এই  সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহ অগ্নিতে ঘি ঢালছে একশ্রেণির স্বার্থান্বেষী বেপরোয়ার দল? একটি দেশের জাতীয় সংহতি বিপন্নের অন্যতম কারণ উগ্র  সাম্প্রদায়িকতা যা থেকে মানুষকে সুপথে নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।

পৃথিবী সৃষ্টির সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত মনুষ্য সভ্যতা, সমাজ কিংবা জাতীয়তাবাদ যাই বলুন কিসে প্রাপ্ত হয়েছে এগুলো? আমাকে প্রশ্ন করলে একবাক্যে বলবো -সবই সম্ভব হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির কারণে। আজকাল পৃথিবীর নানা প্রান্তে জাতীয়তাবাদের ভুল ব্যখ্যা, তার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে বিষোদগার করছে একটি শ্রেণির মানুষ!  জানি না কী তাদের উদ্দ্যশ্যে। তবে একটি ফলাফল খুবই স্পষ্ট আর তা হলো মানুষে মানুষে ভেদাভেদ বাড়ছে, সম্প্রিতি নষ্ট হচ্ছে, একজন মানুষ অন্য মানুষ হতে তার বিশ্বাস  হারাচ্ছে।আর এই সব ঘটনার পিছনে যে বিষয়টি প্রতক্ষ কাজ করছে তা হলো ধর্ম। মানুষ ধীরে ধীরে শান্তির ধর্মকে ব্যাক্তি স্বার্থের কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্য মাঠে নামছে।একজন আরেক জনের জীবনের হুমকি হয়ে দাড়াচ্ছে।খুন-গুম , রক্তাক্ত হচ্ছে সভ্যতা।প্রশ্ন হলো -ধর্মের মাধ্যমে কী জাতীয়তা নির্ধারিত?  সকল ধর্মীয় কুসংস্কার, উগ্রবাদী মনোভাবের বিরোদ্ধে সোচ্চার হয়ে সভ্যতাকে বিলিনের অবস্থা থেকে পেরাতে প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি। আজ ছোট ছোট শিশুদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বা ধর্মীয় সঠিক মূল্যবোধ শিক্ষা না দিয়ে দেওয়া হয় ধর্মীয় সহিংসতার শিক্ষা। ভাবা যায়! কাঁদা মাটি পিটিয়ে ব্যবহার উপযোগী করে তুলার পরিবর্তে বিষাক্ত কোন কিছু ঢুকিয়ে দিচ্ছে খোদ অভিভাবক! এটাকে কী বলবো মূল্যবোধের অবক্ষয় নাকি বিবেকের বার্ধক্য? যখন শিশুর শেখার কথা সব মানুষই সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমার ফল,সবার উপরে মানুষ। আজব ব্যপার হলো অ, অা শেখানোর আগেই ধর্মীয় অনুশাসনের নামে তাদের শিক্ষা দেই আমরা মানুষ অন্যরা ভীনগ্রহী কোন ভয়ংকর কিংবা জড় পদার্থ যাদের মূল্য নিতান্তই নেই!

পরিনামে কী হয় তা সকলের জানা। আমরা জানি ও একেবারে মানি যে মানুষ জন্মগতভাবেই ধর্ম পায় মানে হলো ধর্মচেতনা,  চিন্তা,  ও চর্চা জন্মগতভাবে প্রাপ্ত সম্পদ তাই নিজে ও নিজেদের অধীনস্থদের একই ধারাই নিয়ে আসার চেষ্টা। সাধুবাদ জানাই এই বিষয়কে। 

তবে শুধুমাত্র ধর্মের ক্ষেত্রে  বলছি না আমার আলোচনা সামগ্রিক, বিষয়টা হলো এই যে আজকাল আমাদের শিক্ষা এতটাই উন্নতি হয়েছে যে আমাদের পরিচালিত হতে পারাটা বংশানুগতভাবে আদত হয়ে গেছে আর  বেপরোয়া আদুনিককতার নামে শিক্ষা 

দ্বারা পরিচালনা করতে ক্রমেই উদগ্রীব হচ্ছি! 

আমি অমুক আমার ছেলে, বা ভাই ও হবে অমুক (নিয়ন্ত্রণ)  আমার পূর্ব রা করেছে এমন আমি, আমরা তাই এমন(পরিচালিত) ! একি সুর শুধু বাদ্যযন্ত্রটা আলাদা। কথা হলো একজন মানুষ পরিপূর্ণ মানুষ তো তখনি হয় যখন চিরাচরিত ধরার বাইরে চিন্তা বা মতামতের ক্ষমতা অর্জন করে, আমি বলছিনা যে চিরাচরিত ধরার মধ্যে থেকে এটি সম্ভব নয় তবে এটি অপরিহার্য নয়।চিরাচরিত ধরা বা মূলবোধ, আচরণ চর্চার মাধ্যমে নতুনত্ব আনয়নে প্রয়াসকে সাধুবাদ আমরা ক’জনে দিতে প্রস্তুত এটা নিয়ে প্রশ্ন আছে! মানুষের জন্ম থেকে শুরু করে যাবতীয় ধারা যদিা  পূর্বরা প্রদর্শকের আড়ালে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে আর  মূল্যবোধের ট্যাবু গুলো যদি  বংশানুক্রমিক পরিচালিত হয় তবে সামগ্রিক  ফলাফলের উন্নতির আশা করা মশকরা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি মনে করি পুরাতন চর্চার মাধ্যমে আমিত্ববোধের জাগরনের ও উৎসাহ অতিব প্রয়োজন। চলমান ধারায় পরিবর্তনের ছোঁয়া সব সময় কাজের আগে ‘কু ‘  নয় ‘সু’ ও আনে এবং তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আনে।শুরু করে এক জায়গায় অণ্য জায়গাতে চলে আসার কারণ ‘মূল’!নতুন প্রজাতির জন্ম দেওয়ার জন্য বিপরীত লিঙ্গের মিলন প্রয়োজন কথাটা সকলে জানি ঘটেও তা কিন্তু বলার সময় ‘লজ্জা’ করে! এটাও একটা মূল্যবোধ! এরকম অনেক মূল্যবোধ ও তা চর্চাকারী অহরহ। আমাদের চিন্তাধারার উন্নতি প্রয়োজন যেমন ধরুন আমার!  না হলে কেউ এমন লিখতে পারে! কী জঘ্ণ্য আমি! কত বিষয় থাকতে এটাই লিখতে হলো?

   কী করা সব মূলের দোষ! আমিতো অবাক নই মুচকি হেসে সবার সামনে বলতে মন চায় “আমি বন্য, আমি ধন্য ” বলার সাহস নেই তো বলতে পারি না।ট্যাবু বাবুর 

অনুসারী অনেক যেখানে 

কার্য কিছু নয় বল্লেই সারে সর্বনাশ!

তাই ভালই তো আছি 

আমি একা কেন খেতে যাবো বাঁশ! 

পাড়ার অল্প শিক্ষিত মূর্খ  বলে –

“অত শত বুঝিনা ভাই যা বুঝি তা হলো ধর্ম  যার যার সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিতে কল্যাণ  সবার”

কী জঘন্য!  তাই না? ………. 

    (((চলবে)))

You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।