নর্থ কোরিয়া বাসীর অপরাধ কি?

১৯৫০ সালের কোরীয় যুদ্ধ শেষে নর্থ কোরিয়া সমাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অধীনে চলে আসে।এখানে ধর্ম পালন করা,কোন ধরনের ধর্মীয় গ্রন্থ রাখা গুরুতর অপরাধ।এখন আমার একটা প্রশ্ন তা হচ্ছে আল্লাহ বলেছেন যে ইমান না নিয়ে, ইসলামের পথে না চলে কেউ জান্নাতে যেতে পারবে না।এখন নর্থ কোরিয়াতে না প্রবেশ করা সহজ, না বের হওয়ার পথ সুগম।আর ইন্টারনেট এক্সেসের কথা তো বাদ ই দিলাম।কোন কি উপায় আছে এখানে মহান ধর্ম ইসলাম পৌছানোর?একবার পৌছেও গেলো ধরুন।প্রকাশ্যে কিংবা অগোচরে তাহা পালন কি আদৌ সম্ভব?নর্থ কোরিয়ান পাঠ্য বইগুলো সম্পূর্ণ কিম ডাইনেস্টি নিয়ন্ত্রিত। জন্মকাল থেকে তার শুধু তাদের সুপ্রিম লিডারের উপাসনাতেই অভ্যাস্ত।তাদের সুপ্রিম লিডারের মঙ্গল কামনা করা,তার খুশিতে খুশি হওয়া,মৃত্যুতে কাদা,তাদের মুর্তিতে কুর্নিশ করা তাদের সাংবিধানিক নৈতিক দায়িত্ব,অন্যথায় কঠোর সাজা।  

সুতরাং আমরা এই সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে 

১) নর্থ কোরিয়ানরা অমুসলিম।

২)নর্থ কোরিয়ানরা ইমান ইসলামের বিধান মেনে চলে না।

৩)নর্থ কোরিয়ারা তাদের সুপ্রিম লিডারের প্রতিকৃতিতে ঝুকে অভিবাদন জানায় অর্থাৎ তারা শিরক করে।

সোজা কথা ১৯৫০ থেকে আরম্ভ করে আজ ওবধি যত নর্থকোরিয়ানের জন্ম হয়েছে তারা সবাই জাহান্নামী।

এখন এখানে নর্থ কোরিয়ানদের দোষটা কি?তারা না ইসলামকে জানার সুযোগ পেয়েছে,না তাদের  তা বিশ্বাস করে পালন করবার ফুরসত হয়েছে।তো এই যে ১৯৫০ থেকে আজ ২০২০ ওবধি এতো নর্থ কোরিয়ান এলো আর গেলো তাদের প্রতি কি আল্লাহ ন্যায় বিচার করতে পারলেন?একজন ব্যক্তি জেনে  শুনে ইসলাম দূরে ঠেলে দিলো তাকে পথভ্রষ্ট গাফেল বলে গালি দাও, জাহান্নামী বানাও সেটা খানিকটা হলেও তথাকথিত সমাজ ব্যবস্থায় যৌক্তিক ঠ্যাকে।কিন্তু যারা ইসলামকে  প্রত্যাখান তো দূরের কথা  নাম গন্ধ শুনবার ই সুযোগ পেলো না তাদের কাফিরী টা ঠিক কোন ধরনের কাফিরি  সত্যিই চিন্তার বিষয়।এখন মুসলমানরা বলবে কিয়ামত পর্যন্ত একদল থাকবেন যারা দিনের দাওয়াত দিয়েই যাবেন,তো নিশ্চয় ওখানে একদল ওলামা আছেন যাদের স্বয়ং খোদাতালা নিযুক্ত করে রেখেছেন কল্যানের জন্যে সবার চোখ এড়িয়ে।এর প্রতিউত্তর এমন হতে পারে যে এটা একদই অসম্ভব।কারণ কিম ডাইনেস্টির চোখ এড়িয়ে এমন একটা নজরবন্ধী জাতি মর্জি মাফিক কিচ্ছুটি করতে পারবে না। আর তারা ঘাপটি মেরে ছদ্মবেশে যদি বসেও থাকে তবে প্রশ্ন হতে পারে যে তারা আত্মপ্রকাশ করার আগ পর্যন্ত যারা বেইমান অবস্থান মরে যাবে তাদের দোষটা কি?

সত্যি বলতে আল্লাহ নামক কাল্পনিক স্রষ্টার মহিমার দৌড় মানুষের অন্ধভক্তি পর্যন্ত।এই সীমার বাহিরে যেই অসীম বাস্তবিকতার জগৎ  আছে তাতে তার কোন অস্তিত্ব নেই।সত্যিই যদি আল্লাহ ন্যায় বিচারক হতেন তবে আল্লাহ কোরিয়ান জাতিকে অনেক আগেই এই দমন নীপিড়ন থেকে মুক্ত করে তাদের ইমান দিয়ে আখলাক দিয়ে তাদের জমিনের উপর খিলাফত দিয়ে দিতেন। সত্যিই যদি ইমানের পরওয়া থাকতো খোদার তবে তাদের মধ্যে কোরান-হাদীসের জ্ঞান দিতেন নাকি কিম বংশের দাসত্ব আর তাদের তুলো ধ্বনি করার কাজে লাগাতেন।সত্যি বলতে করুনাময়ী খোদা বলতে কেউ ই নেই।আমরাই আমাদের ভাগ্যের খোদা।আমরাই আমাদের মুক্তির পথ।        

You may also like...

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।